ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের (ঢাকসু) সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুরের বি’রু’দ্ধে ধ’র্ষ’ণ মা’ম’লা, আ’ট’ক ও মুক্তির বিষয়ে মুখ খুলেছেন তার স্ত্রী মারিয়া আক্তার লুনা।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে যান লুনা। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমাদের লা’ঞ্চিত হতে হচ্ছে। এটা মি’থ্য মা’ম’লা, একটা ষ’ড়’য’ন্ত্র। এটা আমি কেন, আপনারও জানেন। যারা নিয়ে এসেছে (পুলিশ সদস্যরা) তারাও জানে। কী হয়েছে দেশবাসী জানে, সবাই জানে।’
এ সময় নুরের বি’রু’দ্ধে আনিত অভি’যো’গ ঘৃ’ণ্য ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন লুনা। তিনি বলেন, ‘আমি আমার হাসবেন্ডকে চিনি। সে ছোটবেলা থেকে কোন ধরনের, কোন প্রকৃতির আমি জানি। ও কখনোই এ ধরনের কাজ করতে পারে না এবং এটা তো সাপোর্ট করার কোনো ধরনের প্রশ্নই আসে না। ওর মন মানসিকতা, ওর মেন্টালিটি এমন না। ওর একটা মেয়ে আছে। আমার সবচেয়ে কষ্টের জায়গা এটাই- মেয়েটা (অভি’যোগ’কারী) ওর বি’রু’দ্ধে এমন একটা অভি’যো’গ করেছে যা ভিত্তিহীন এবং বা’নো’য়াট। এটা সম্পূর্ণ মানুষের প্র’রো’চ’নায় পড়ে করা হয়েছে।’
নুরের ব্যাপারে বলতে গিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন তার স্ত্রী। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি জানান, এমন অভি’যো’গের কারণে তার পরিবারকে ছোট হতে হচ্ছে।
লুনা বলেন, ‘আমাদের পাঁচ বছরের সংসার জীবন, আমি কি বলতে পারব না আমার স্বামী কেমন? আমার আসলে কোনো ভাষা নাই, আমি বলতে পারছি না এমন একটা মিথ্যা, এমন গু’জ’ব, এমন একটা মা’ম’লায় ওকে (নুর) ফাঁ’সা’নো হয়েছে। আমি এমন পরিস্থিতির শি’কার কখনোই হই নাই। আমি কখনো ভাবি নাই আমাকে এভাবে মিডিয়ার সামনে আসতে হবে।’
নুরের স্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি, আমার সন্তান লাইভ দেখছি ওকে গ্রে’প্তা’র করা হচ্ছে। আমার সন্তান তখন দরজার কাছে গিয়ে বলছে বাবা আসছে, বাবা আসছে। এটা অ’ন্যা’য়।’
এ সময় সাংবাদিকরা পুলিশের পক্ষ থেকে লুনাকে বা তার পরিবারকে কিছু জানানো হয়েছে কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘কোনো কিছুই জানানো হয়নি। ওকে যখন নিয়ে আসা হয়, তখন বলেছে নিউরো সার্জারি বিভাগে ভর্তি করানো হবে। কিন্তু মি’থ্যা বলে ওকে পেছনের দরজা দিয়ে বের করে নিয়ে গেছে। গাড়ি দেখে তখন বুঝেছি যে পুলিশ ওকে নিয়ে যাচ্ছে। ও এমনিতেই শা’রীরিকভাবে অনেক অ’সুস্থ, কয়েকবার ওকে মা’রা হয়েছে। ওর বুকের পাজরে সমস্যা আছে, মেরুদন্ডের দুটি হাড়ে ফ্র্যা’ক’চার। আমিও আওয়ামী পরিবারের একজন সন্তান এভাবে আমাকে আমার পরিবারকে এভাবে মিডিয়ার সামনে আসতে হবে ছোট হতে হবে আমি ভাবি নাই। এটা মিথ্য মা’ম’লা, একটা ষ’ড়’য’ন্ত্র। মি’থ্যা মা’ম’লা দেওয়া হয়েছে।’
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নুরসহ ছয়জনের বি’রু’দ্ধে ধ’র্ষ’ণ মা’ম’লা’র প্রতিবাদে নুর ও তার সহযোগীরা শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবনের দিকে বি’ক্ষো’ভ মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় নুর ও তার ছয় সহযোগীকে রাজধানীর মৎস্য ভবনের সামনে থেকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। রাত ১০টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। রাত পৌনে ১২টার দিকে নুর ও তার সহযোগী সোহরাবকে ডিবির কার্যালয়ে নেওয়া হয়। দ্বিতীয় দফায় নুরকে নিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্র অধিকারের নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে গাড়ির সামনে বসে স্লোগান দেন। নুরের স্ত্রী তার ছোট বাচ্চাকে নিয়ে গাড়ির সাথে ঝুলে পড়েন। পরে পুলিশ লাঠি’চা’র্জ করে তাদেরকে সরিয়ে দিয়ে নুরকে নিয়ে যায়। পরে রাত পৌনে ১টার সময় ডিবি পুলিশের কার্যালয় থেকে নুরকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ছাড়া পাওয়ার পর ডিবি কার্যালয়ের সামনে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, ‘আমরা বুঝিনি কী কারণে আমাদের ধরে আনা হলো আর কী কারণে ছেড়ে দেওয়া হলো। যেটা মনে হচ্ছে মানুষকে ভ’য়-ভী’তি দেখানোর জন্য এটা করা।’
এর আগে গত রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থী লালবাগ থানায় এ মা’ম’লা’টি করেন। মা’ম’লা’য় মোট ছয়জনকে আ’সা’মি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ধ’র্ষ’ণে সহযোগিতাকারী হিসেবে নুরুল হক নুরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে এ মা’ম’লার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৭ অক্টোবর দিন ধার্য করেছেন আদালত। সোমবার ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরা মা’ম’লার এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য এদিন ধার্য করেন।